কোনঠাসা হয়ে পড়েছে ৩ বীমা কোম্পানি

পাপলু রহমান: কর্মী সংকট ও অলাভজনক হয়ে উঠেছে ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিনটি সাধারণ বীমা কোম্পানি। কোম্পানি তিনটিকে একিভুতকরণের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়নে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়নি। চলতি বছরের ১ এপ্রিল কোম্পানিগুলোকে একত্রিত করে পরিচালনার সিদ্ধান্ত ছিল ভারতের।

সম্প্রতি দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে (২০১৯-২০) বলা হয়েছে, বীমা তিনটি সংযুক্ত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি পুরোপুরি কার্যকর করতে আগামী অর্থবছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়েন্টাল ইন্স্যুরেন্স ও ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে একত্রিকরণের আগ্রহ দেখায় ভারত সরকার এবং তা ওই অর্থবছরেই কার্যকর করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কোম্পানিগুলো নতুন কর্মী নিয়োগ থেকে বিরত ছিল।

বিজনেস স্টাডার্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে কোম্পানিগুলোতে ৬০০ থেকে ৯০০ অফিসার পদ খালি রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ১২ হাজার পদ কর্মীশূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ও ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইন্স্যুরেন্স শেয়ার বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বাজারে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০.৭৮ শতাংশ। কিন্তু ২০১৮ সালে তা ৮.৬৩ শতাংশে নেমে আসে। একই সময়ে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ১১.০২ শতাংশ থেকে ৯.২৭ শতাংশে নামে।

তিনটি বীমা কোম্পানিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় ২০১৮ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে। সে বছর কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম সংগ্রহ হ্রাস পায়। কারণ হিসেবে কর্মী স্বল্পতা ও কোম্পানিগুলোর অস্বচ্ছতা উঠে আসে।

এ বিষয়ে ভারতের ইনভেস্টমেন্ট অব পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি অতনু চক্রবর্তী জানান, কোম্পানিগুলোকে একত্রে পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। এজন্য সময় লাগবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এ ধরনের কাজে দক্ষ মানবলেরও সংকট ও কিছু সাংগঠিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই কোম্পানিগুলো সংযুক্ত করার আগে বিষয়গুলো ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।

এদিকে ভারতের সাধারণ নির্বাচন চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য বীমা কোম্পানিগুলোর একত্রিকরণে বিলম্ব হওয়ার আরও সম্ভাবনা রয়েছে।

এশিয়া ইন্স্যুরেন্স পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরে ওই তিনটি কোম্পানির ২০০টি প্রোডাক্ট ছিল। প্রিমিয়াম আয় ছিল মোট ৪১ হাজার ৪৬১ রুপি এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের হার ছিল ৩৫ শতাংশ। কোম্পানি তিনটিকে একিভূত হলে সেটিই হবে ভারতের সবচেয়ে বড় নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

এর আগে ২০১৭ সালেও নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্স কোম্পানি ও জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া একত্রে ব্যবসা পরিচালনায় অন্তর্ভূক্ত হয়।