প্রাকৃতিক দুর্যোগে বীমা সুরক্ষা ঘাটতি মোকাবিলা জরুরি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্রমেই বাড়ছে। এর প্রভাব মোকাবিলায় যথাযথ বীমা কভারেজ না থাকায় বৈশ্বিক অর্থনীতি গভীর ঝুঁকিতে পড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি গ্রুপ অব টুয়েন্টি (জি–২০) দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতিত্বে, আন্তর্জাতিক বীমা তদারকি সংস্থা (আইএআইএস) ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপ (ডব্লিউবিজি)- এর যৌথ উদ্যোগে অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের বৈঠকের সাইড ইভেন্টে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বীমা সুরক্ষা ঘাটতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে বক্তারা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষতির অর্ধেকেরও বেশি এখনো বীমাহীন থেকে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতিতে (ইএমডিইএস) এই হার আরও বেশি, যেখানে প্রিমিয়াম বহনক্ষমতা কম, বীমা পণ্যের প্রবেশাধিকার সীমিত এবং ঝুঁকি–তথ্যপ্রবাহ দুর্বল। এর ফলে প্রতিটি দুর্যোগ সরকারের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে থাকে, যা ঋণনির্ভর পুনর্গঠন ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ব্যয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
বক্তারা আরো বলেন, বীমা কেবল দুর্যোগ–পরবর্তী ক্ষতিপূরণ নয়; বরং দ্রুত পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ঝুঁকি হ্রাসে প্রণোদনার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্যোগের আগে প্রতিটি ১ ডলার বিনিয়োগ গড়ে ১৫ ডলার পর্যন্ত পুনর্গঠন ব্যয় সাশ্রয় করে। অথচ বর্তমানে আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রায় ৯০ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে ঘটনাপরবর্তী পুনর্বাসনে, প্রতিরোধমূলক উদ্যোগে নয়।
আলোচনায় বহুপক্ষীয় সহযোগিতা ও উদ্ভাবনী সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন, প্যারামেট্রিক বীমা, আঞ্চলিক ঝুঁকি তহবিল, টেকসই পাবলিক–প্রাইভেট অংশীদারিত্ব এবং আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। একইসঙ্গে বীমা তদারক সংস্থাগুলোকে কৌশলগত আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।