মৃত ব্যক্তিও ইন্স্যুরেন্স একাডেমির বোর্ড অব গভর্নরস!

আবদুর রহমান আবির: চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিবসহ ১০ জনের একটি বোর্ড। যার দু’জনই মৃত। এমন বোর্ড অব গভর্নরস নিয়েই পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি। যার মূল উদ্দেশ্য বীমাখাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। প্রতিষ্ঠানটির সরকারি ওয়েব পোর্টালে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক কে এম মোরতুজা আলী বলেন, এটা মূলত সরকার ও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের অমনোযোগিতার ফল। মানুষ যে কোন সময় মারা যেতে পারেন। কিন্তু বীমাখাতে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব গভর্নরস ৪ বছর আগে মৃত ব্যক্তির নামে চলবে তা কি করে হয়!

তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি পরিচালনায় ১০ জনের বোর্ড অব গভর্নরস রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এই বোর্ডের চেয়ারম্যান। আর একাডেমির পরিচালক (অতিরিক্ত-সচিব) মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বোর্ড অব গভর্নরস এর সদস্য-সচিব।

বোর্ডের ৮ সদস্য হলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র সদস্য মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, জীবন বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী নূর,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের উপদেষ্টা নাসির এ চৌধুরী, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান এম মঈদুল ইসলাম (মরহুম) এবং মুজিব-উদ-দৌলাহ (মরহুম)।

জানা যায়, ১৯৮৫ সালে ১৫ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন এম মঈদুল ইসলাম। ২০১৪ সালের ১১ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর আগে মৃত্যুবরণ করলেও ইন্স্যুরেন্স একাডেমির বোর্ড অব গভর্নরস’র সদস্য তালিকায় এখনো এম মঈদুল ইসলামের নাম রয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির বোর্ড অব গভর্নরস এর আরেক সদস্য মুজিব-উদ-দৌলাহ। তিনিও মারা গেছেন অনেক দিন আগে। মৃত্যুর দীর্ঘ দিন পরেও ইন্স্যুরেন্স একাডেমির বোর্ড অব গভর্নরস’র সদস্য তালিকায় মুজিব-উদ-দৌলাহ’র নাম রয়েছে। তবে উভয়ের মৃত্যুর পর নামের পাশে যুক্ত করা হয়েছে মরহুম।

এ বিষয়ে একাডেমির পরিচালক ও বোর্ড অব গভর্নরস’র সদস্য-সচিব মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, তাদের মৃত্যুর পরই আমরা সরকারকে জানিয়েছি। নতুন সদস্য দেয়ার তাগিদও দিয়েছি। কিন্তু এখনো আমরা নতুন সদস্যের নাম পাইনি। তাই মৃত সদস্যের নামের পাশে মরহুম যুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি আবারও মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি নতুন সদস্য দেয়ার জন্য। আশা করছি খুব শিগগিরই নাম পেয়ে যাবো। তবে এ বিষয়ে আমার পক্ষে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। বোর্ড অব গভর্নরস –এ মৃত ব্যক্তির নাম থাকার যৌক্তিকতার বিষয়ে মন্ত্রণালই ভালো বলতে পারবে।