স্বামীর মৃত্যুদাবির চেক হাতে পেলেন মুলিদা
নিজস্ব প্রতিবেদক: সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বীমা গ্রাহক মৃত কাশেম আলী শেখের স্ত্রী মুলিদা খাতুন স্বামীর মৃত্যুদাবির চেক হাতে পেয়েছেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির নির্দেশে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক তার হাতে তুলে দেয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির নিকট এ চেক হস্তান্তর করে বীমাকারী সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কমিটির চেয়ারম্যান এ চেক তুলে দেন বীমাগ্রাহকের স্ত্রী মুলিদা খাতুনের হাতে। চেক হাতে পেয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিকে ধন্যবাদ জানান মুলিদা।
এরপর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইন্স্যুরেন্সকনসালটেন্টবিডি কার্যালয়ে মুলিদাকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানানো হয়। এসময় মুলিদার হাতে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেকটি তুলে দেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই চেক প্রদানের কথা ছিল। সে সময় কোম্পানিটি আপিল করার ইচ্ছা জানিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির আদেশের সত্যায়িত কপি চায় কোম্পানিটি।
তবে আপিল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
এর আগে ৩ জুলাই শুনানি শেষে মুলিদা খাতুনকে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি।
মুলিদার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাশেম আলী শেখ সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সে একটি পলিসি করেন। পলিসি নম্বর ৪৯০০১৭২৮-২, যার মোট বীমা অংক ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বামীর করা এ বীমা পলিসিতে নমিনি করা হয় মুলিদা খাতুনকে।
এরপর বীমা কোম্পানি থেকে ২০১৩ সালের ৩০ মে স্বাক্ষরিত পাকা ফার্স্ট প্রিমিয়াম রিসিপ্ট (এফপিআর) দেয়া হয়। ওই রশিদে লিখিত তথ্য অনুসারে পলিসি শুরুর (কমেন্সমেন্ট) তারিখ ১২ মে ২০১৩ এবং ঝুঁকি গ্রহণের তারিখ ১২ মে ২০১৩।
এদিকে ২০১৩ সালের ১ জুন আকষ্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেন বীমা গ্রাহক কাশেম আলী শেখ। এরপর সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বীমা দাবি উত্থাপন করেন মুলিদা। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেলেও দাবিটি পরিশোধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বীমা কোম্পানিটি।
এরপর স্বামীর মৃত্যু দাবির পাওনা টাকা চেয়ে বীমা কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে আবারও দরখাস্ত করেন মুলিদা। তবে বীমা কোম্পানিটির দেয়া পাকা কাগজপত্রে সবগুলো তারিখ ঠিকমতো থাকার পরও “কে কারা অসাধু উপায়ে আগের তারিখ দেখিয়ে পলিসিটি করা হয়েছে” বলে অভিযোগ তুলে দাবিটি প্রত্যাখ্যান করে সানফ্লাওয়ার লাইফ।
এ অবস্থায় ন্যায্য বীমা দাবি পেতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে অভিযোগ করেন মুলিদা খাতুন। একই সঙ্গে পলিসির তারিখ পরিবর্তন করে গ্রাহকের টাকা মেরে দেয়ার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত কোম্পানিটি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাওয়া হয় ওই অভিযোগ পত্রে।
এ বিষয়ে মুলিদা খাতুন ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, বীমা কোম্পানিটি দাবি পরিশোধ না করতে পাঁয়তারা করছিল। তবে ইন্স্যুরেন্সকনসালটেন্টবিডি’র পরামর্শ ও সার্বিক সহায়তায় আজ আমি বীমা দাবির চেক হাতে পেলাম। এ জন্য ইন্স্যুরেন্সকনসালটেন্টবিডি’র কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, ন্যায় বিচারের মাধ্যমে বীমা দাবির চেক হাতে তুলে দেয়ায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে আর কোন বীমা গ্রাহককে যেন আমার মতো ভোগান্তির শিকার হতে না হয়। গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।