ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি

অনুমোদন ছাড়াই অফিস করছেন মিয়া ফজলে করিম

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনুমোদন ছাড়াই ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সে অফিস করছেন মিয়া ফজলে করিম। সকল ধরণের দাফতরিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাও করছেন মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে। অথচ গত ২৮ অক্টোবর তার মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার মেয়াদ শেষ হয়েছে। নিয়োগ নবায়নের আবেদন করলেও এখনো অনুমোদন করেনি আইডিআরএ।

কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ও বেতন ভাতাদি গ্রহণ করা বীমা আইন ২০১০ এর ৮০ ধারা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২ এর পরিপন্থী। জিএডি-১৩/২০১৫ নং সার্কুলারেও এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

মিয়া ফজলে করিমের বিরুদ্ধে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ না করে মূখ্য নির্বাহী পদে চাকরি নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। তবে অদৃশ্য কারণে মিয়া ফজলে করিমের বিষয়ে এখনো সুষ্পষ্ট কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ফজলে করিমের দায়িত্ব পালন নিয়ে নানা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে নন-লাইফ বীমাখাতে। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তার নিয়োগ অনুমোদন করানো হবে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। মিয়া ফজলে করিমকে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী পদে বহাল রাখতে কোম্পানির এত আগ্রহ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বীমাখাতে।

তথ্য অনুসারে, মিয়া ফজলে করিমকে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ করে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে একই বছরের ১৮ নভেম্বর ৩ বছরের জন্য অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত তার নিয়োগ অনুমোদন করে আইডিআরএ।

ওই নিয়োগপত্র অনুসারে গত ২৭ অক্টোবর মিয়া ফজলে করিমের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার মেয়াদ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর, ২০১৮ থেকে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদটি শূন্য হয়ে পড়েছে।

তবে মেয়াদ শেষের আগেই মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মিয়া ফজলে করিমের নিয়োগ নবায়নের জন্য আইডিআরএ’র কাছে আবেদন জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রায় ১ মাস পেরিয়ে গেলেও তার নিয়োগ নবায়ন অনুমোদন বা নাকোচ করেনি আইডিআরএ।

এদিকে অনুমোদন না থাকলেও কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ আঁকড়ে রেখেছেন মিয়া ফজলে করিম। কোম্পানির সকল ধরণের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তিনি। অফিসিয়াল কাগজপত্রেও মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে মিয়া ফজলে করিমকে।

অথচ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র সার্কুলার নং জিএডি-১৩/২০১৫ -এ বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের (নিয়োগ বা নবায়ন ক্ষেত্রমতে) পূর্বে কেহ মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন বা বেতন ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন না।

বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার শূন্যপদে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যবহিত নিম্নপদে নিয়োজিত কর্মকর্তা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তবে এর মেয়াদ একাধারে ৩ (তিন) মাসের অধিক হবে না।