বীমা কর্মচারী কল্যাণ তহবিল গঠন প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক:
অনেক দিন ধরেই বীমা কর্মচারীদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে নিম্নে অভিমত ব্যক্ত করা হলো।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বীমা কর্মচারীদের নানাবিদ সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। যেমন;
১. গ্রুপ লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
২. গ্রুপ হেলথ ইন্স্যুরেন্স।
৩. প্রভিডেন্ট ফান্ড।
৪. গ্রেচিউটি বা এন্ড অফ সার্ভিস বেনিফিট ইত্যাদি।
জানা মতে বাংলাদেশে মোট ৭৮টি বীমা কোম্পানির মধ্যে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি উপরে বর্ণিত সুবিধাগুলোর কিছু বা আংশিক সুবিধা প্রদান করে থাকে।
কল্যাণ তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য:
বীমা কর্মচারীদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রয়োজনে তাদের বা তাদের পরিবার বর্গকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা। যেমন;
১. কর্মচারীর অকাল মৃত্যুতে তার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদান।
২. কর্মচারীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান।
৩. কর্মচারীর সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ বহন।
৪. কর্মচারীর সন্তানের বিবাহের খরচ প্রদান ইত্যাদি।
কল্যাণ তহবিলের ফান্ডের ব্যবস্থা:
বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তাবিত কল্যাণ তহবিলের ফান্ড সংগ্রহ করা যেতে পারে। যেমন;
১. সরকার প্রদত্ত আর্থিক মঞ্জুরী
২. বীমা কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত বাৎসরিক চাঁদা
৩. বীমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সার্ভে ফার্ম, ইন্স্যুরেন্স ব্রোকার ইত্যাদি কর্তৃক প্রদত্ত চাঁদা।
কারা কল্যাণ তহবিলের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য:
কল্যাণ তহবিল পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
কল্যাণ তহবিল পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনা:
কল্যাণ তহবিল পরিচালনার দায়িত্ব বীমা মালিক সমিতি (বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন) অথবা বীমা কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) গ্রহণ করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন কল্যাণ তহবিল যেমন; সেনাকল্যাণ তহবিল, চতুর্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারীদের জন্য কল্যাণ তহবিল ইত্যাদির উল্লেখ করা যেতে পারে।
আশা করি বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন এবং বীমা কর্তৃপক্ষ মানবিক দিক থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডিতে এ বিষয়ে লেখকের একটি লেখা ০৩-০৪-২০১৮ইং তারিখে প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক: এ কে এম এহসানুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। প্রায় চার দশক দুবাইয়ে অবস্থানকালে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছেন।
এ সময় তিনি লন্ডন থেকে ফেলো অফ দি চাটার্ড ইন্স্যুরেন্স ইন্সটিটিউট (এফসিআইআই), এসোসিয়েটস অফ দি ইন্সটিটিউট অফ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (এআইআরএম) এবং এসোসিয়েট অফ দি চাটার্ড ইন্সটিটিউট অফ আরবিট্রেটরস (এসিআইআরবি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইন্স্যুরেন্সের ওপর এ পর্যন্ত লেখকের অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে, যা দেশে এবং বিদেশে সমাদৃত। পেশায় লেখক একজন চাটার্ড ইন্স্যুরার। বর্তমানে তিনি সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োজিত।
ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি'র পাঠকদের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে বীমার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছেন এ কে এম এহসানুল হক।