অগ্নিবীমার প্রয়োজনীয়তা এবং বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বিগত বেশ কিছু কাল যাবত রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নগরবাসীর মনে আতঙ্ক ও ভীতি সঞ্চার করেছে। এই সমস্ত অগ্নিকাণ্ডে সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বহু মূল্যবান জীবনের অকাল অবসান ঘটেছে।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, এফআর টাওয়ার, গুলশানের ডিএনসিসির কিচেন মার্কেট, চকবাজারের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে সম্পত্তির অভাবনীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এই সমস্ত ক্ষতি এক ধরনের জাতীয় সম্পদের অপচয় যা অগ্নিবীমার মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব।

জানা মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তির অগ্নিবীমা ছিল না। এই সমস্ক অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির দায় দায়িত্ব পড়েছে সম্পত্তির মালিকের কাঁধে যা তাদের আর্থিকভাবে পঙ্গু বা নিঃস্ব করে দিতে পারে।

আইন করে সরকারি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, কল কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান-ভবন, রেসিডেন্সিয়াল হাই রাইজ টাওয়ার ইত্যাদি বাধ্যতামূলকভাবে অগ্নিবীমার আওতায় আনা প্রয়োজন। অগ্নিবীমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করতে পারে।

আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি গভীরভাবে বিবেচনা করে দেখবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদের অপচয় রোধের পাশাপাশি অগ্নিবীমাখাতে প্রিমিয়াম প্রবৃদ্ধির পথও প্রশস্ত করা সহজ হবে।

আরেকটি বিষয় আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরই আগুন ধরার কারণ খোজা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে কেন এই ভয়াবহ ক্ষতি। কেন উদ্ধার কাজ ব্যাহত হলো নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিন গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা থেকে জানা যায়, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের অভাব, বিল্ডিং কোড না মানা, ফায়ার এক্সিট না থাকার বিষয়গুলো সামনে আসে। অগ্নিবীমা করতে হলে বীমা কোম্পানিগুলো প্রি-ইন্সপেকশন করে থাকে প্রি ইন্সপেকশন এসব ত্রুটি সহজেই ধরা পড়ে।

এতে করে ভবন মালিকরা এসব বিষয়ে সচেতনভাবে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারে। তাই অগ্নিবীমার শুধু আগুনে ক্ষয়ক্ষতির লোকসান পোষাতেই নয়, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা আশা করছি, সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে। ভবনের অগ্নিবীমা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।