ফুলেরও বীমা করতে চায় তারা

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ভারি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারতের হাওড়া জেলার ফুলচাষীরা। কোথাও ফুল গাছের গোড়ায় পানি জমেছে আবার কোথাও গাছই ভেঙে গেছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে চাষীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ফুল চাষীরা জানিয়েছেন, তারা অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফুল চাষ করেছেন। ফুল গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা কীভাবে ঋণ শোধ করবেন তা বুঝতে পারছেন না।

এ বারের বৃষ্টিতে আলু চাষীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চাষীরা বলছেন, বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় ও শিলা থাকার কারণে এ ক্ষতি হয়েছে। এ বার ফুলচাষীরাও একই সমস্যায় পড়লেন।

হাওড়া উদ্যান বিভাগ বৃষ্টিতে ফুল চাষে ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষীরা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

হাওড়া জেলায় বাগনান, শ্যামপুর ও উলুবেড়িয়ায় ফুলের চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় বাগনানে। প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, গোলাপ, জবা, চেরি, জিনিয়া সূর্যমূখী, ডালিয়া, রজনীগন্ধা প্রভৃতি ফুলের চাষ হয় এখানে।

চাষীদের দাবি, বৃষ্টিতে সব ধরনের ফুল গাছেরই ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ গাছ ঝড়ে ভেঙে গেছে। গাঁদা ফুলের গাছের গোড়ায় পানি জমেছে। ফলে, গোড়া পঁচে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। অনেক গাছের ফুল মাটিতে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়েছে।

বাঁকুড়দহ গ্রামের বাসিন্দা পুলক ধাড়া বলেন, আমি দু’বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছিলাম। ঝড়বৃষ্টিতে প্রায় সব নষ্ট হয়ে গেছে।’’ ভোলানাথ ধাড়া ১০ কাঠা জমিতে সূর্যমুখী, ডালিয়ার মতো ফুলের গাছ লাগিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার চারা লাগিয়েছিলাম। বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।’’

‘সারা বাংলা ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’র রাজ্য সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘ফুল চাষীদের যাতে ফসল-বীমার আওতায় আনা যায়, সে জন্য রাজ্য সরকারকে কয়েকবার জানানো হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফুলবাগান যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাতে বীমা না-থাকলে চাষীরা ব্যাংক ঋণ শোধ করতে পারবেন না। টাকার অভাবে চাষও করতে পারবেন না।’’

জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা অবশ্য জানান, এখনও ফসল-বীমার আওতায় ফুলকে আনা হয়নি। সেই কারণে ফুল চাষীরা বীমার টাকা পাবেন না। তবে তাদের অন্য ভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়া যাবে কিনা সেটা নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনও নির্দেশনা আসেনি।