নতুন কোম্পানিগুলো বীমা বাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: নতুন পুনর্বীমা কোম্পানিগুলো ভারতের বীমা বাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসছে এ বীমা বাজারে। এর ফলে বীমা গ্রাহকরা নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এসব সুযোগ-সুবিধা ভারতের বীমাখাতে অনুর্ভূক্তি বা পেনিট্রেশন বৃদ্ধিকে ত্বড়ান্বিত করবে।
এমনটাই জানিয়েছেন জিআইসি রি'র চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলিস জি ভাইডিয়ান। মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত বীমা ও পুনর্বীমা ব্যবসায়ীদের ১১তম ভারতীয় সম্মিলনের উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে ২০১৭ সালে ভারতের বীমাখাতের অর্জন সম্পর্কে ধারণা দেয়া হচ্ছিল। আর এটা এমন সময় যখন কতিপয় বিদেশি পুনর্বীমা কোম্পানি দেশটিতে ব্যবসা শুরু করেছে।
জেনারেল ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (জিআইসি রি)'র এই শীর্ষ ব্যক্তিত্ব বলেন, ভারত আজ সুযোগ-সুবিধার ভূমি, যেখানে বিরাজ করছে ব্যবসায়িক পরিবেশ। সমৃদ্ধি ও প্রত্যাশা এর বিশিষ্টতা দান করেছে। দ্বিতীয় ধাপে বীমাখাত উদারীকরণের ফলে বীমা ও পুনর্বীমা বাজারে যারা অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তারা যে ব্যবসার ভালো পরিবেশ অনুভব করছেন সেটা তাদের মাঝেই প্রতিফলিত।
এশিয়া ইন্স্যুরেন্স রিভিউ'র এডিটর ইন চীফ শিভাম শুব্রমানিয়াম, যিনি জিআইসি রি'র সঙ্গে যৌথভাবে এই সম্মিলন আয়োজন করেছেন, তিনি সম্মিলনের উদ্বোধাকালে সংক্ষিপ্ত অথচ সংহৃত বক্তব্য রাখেন। শিভাম তার বক্তব্যে বলেন, সকল স্টেকহোল্ডারের আকুল প্রত্যাশা ও ভারতীয় অর্থনীতি উন্নয়নের পথে সর্বোচ্চ মাত্রায় অবস্থানের এই সময়ে দেশের বীমাখাত ব্যাপকভাবে অবদান রাখতে পারে। এখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
এসসিওআর'র চীফ ফিনান্সিয়াল অফিসার ক্রিস্টিয়ান ডেলানস তার প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল পি এন্ড সি বিষয়ে মূল প্রবন্ধ আলোচনায় ভারতের প্রোপার্টি এন্ড ক্যাজুয়ালিটি (পিএন্ডসি)'র উচ্চ প্রবৃদ্ধি সম্পর্কেও বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ২০১১ সাল থেকেই ভারতের বীমাখাতে এই প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ২০ শতাংশ। এই বাজারের মুনাফা ও তার আন্ডাররাইটিং পুরোপুরি লাভজনক তথা তেজি ইনভেস্টমেন্ট রিটার্ন দ্বারা পরিচালিত হয় যা প্রযুক্তিগত ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার পরও ধারাবাহিকভাবে ১১০ শতাংশের বেশি, বলেন ডেলানস।
নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জি শ্রীনিভাসন তার বিশেষ বক্তব্যে ভারতীয় বীমাখাতের উন্নয়নের মূল চালকগুলোর কথা একে একে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকার পরিচালিত পদক্ষেপে ২০১৬-১৭'তে ৬১ কোটি ৮০ লাখ ব্যক্তি সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোর আওতায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর জনধন যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা এবং অন্যান্য প্রকল্পও এরমধ্যে রয়েছে।
সরকারের প্রত্যক্ষ পদক্ষেপগুলো বীমা শিল্পের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হলেও আরো কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো এ খাতকে এগিয়ে নিচ্ছে। এসবের মধ্যে আইনী, প্রযুক্তিগত, আর্থ-সামাজিক এবং সাধারণ আর্থিক উপাদানও বীমাখাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জি শ্রীনিভাসন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতের বাজারে বিদেশি পুনর্বীমা কোম্পানিগুলোর ৯টি শাখা এবং ২টি দেশীয় পুনর্বীমা কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতের মুম্বাইয়ে ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ অনুষ্ঠিত ৩ দিনব্যাপী এবারের সম্মিলনে ৭শ'র বেশি বীমা ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন। (সূত্র: এআইআর)